হারাম একটি আরবি শব্দ যার অর্থ নিষিদ্ধ। হারাম হচ্ছে এমন জিনিস যা কুরআন ও সুন্নাহের মাধ্যমে নিষিদ্ধ হয়েছে এবং এই বিষয়টা মানাই হচ্ছে মানুষের জন্য উপকারী। সেটা শারীরিকভাবেও হতে পারে আবার মানুষিকভাবেও হতে পারে। সুতরাং যেই বিষয়গুলো হারাম সেগুলো থেকে আমাদেরকে অবশ্যই দূরে থাকতে হবে। নিন্মে কিছু হারাম বিষয়ের তালিকা তুলে ধরা হলো।

আত্মহত্যা করা হারাম :
আত্মহত্যা মহাপাপ। এ কাজ থেকে বিরত থাকতে মহান আল্লাহপাক বিশেষভাবে নির্দেশ দান করেছেন এবং আত্মহত্যার পরিণামের কথা ভাববার জন্য কঠোর ও যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির বর্ণনা দিয়ে মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন, আর তোমরা নিজেদের হত্যা করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি দয়ালু। এবং যে কেউ জুলুম করে, অন্যায়ভাবে উহা (আত্মহত্যা) করবে, অবশ্য আমি তাকে অগ্নিদগ্ধ করব, আল্লাহর পক্ষে উহা সহজসাধ্য। (সূরা-নিসা-২৯-৩০)

হস্তমৈথুন করা হারাম:

এটা ইসলামের নিষিদ্ধ একটি কাজ। এই কাজটি নিষিদ্ধ হওয়ার সাথে সাথে এটি একটি শারীরিকভাবেও অনেক ক্ষতিকারক। সুতরাং সবাইকে এটা থেকে বেঁচে থাকতে হবে।

আল্লাহর নাম ছাড়া কোনো প্রাণী জাবেহ করা হারাম:

যে কোনো পশু জবেহ করার সময়ই আল্লাহর নাম নিতে হবে। আল্লাহর নাম না নিয়ে পশু যবেহ করলে সেটা হারাম হবে। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, আপনার প্রভূর উদ্দেশে সালাত আদায় করুন এবং যবেহ করুন (সূরা– আল–কাওসার, আয়াত– ২) একটি হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নামে যবেহ করে তার ওপর আল্লাহর লানত। (সহীহ মুসলিম)

ট্যাটু লাগানো হারাম:

এটা ইসলামে নিষিদ্ধ একটি বিষয়। কেননা আল্লাহপাক মানুষকে সব থেকে বেশি সুন্দর করে সৃষ্টি করেছেন। এই সৃষ্টির মধ্যে অন্য কিছু তৈরি করা এটা ইসলামে নিষিদ্ধ।

মদ ও জুয়া খাওয়া হারাম:

মদ ও জুয়া ইসলামের সবচেয়ে বড় পাপগুলোর মধ্যে একটি। আল্লাহ ও তার নবী (সা.) আমাদের মদ খাওয়া থেকে নিষেধ করেছেন। কুরআনে মহান আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, হে ঈমানদারগণ! মদ, জুয়া, মূর্তি পূজার বেদী ও ভাগ্য নির্ণায়ক শরসমূহ এ সমস্তই হচ্ছে ঘৃণ্য শয়তানী কার্যকালাপ। এগুলো থেকে দূরে থাক, আশা করা যায় তোমরা সফলতা লাভ করবে। (সূরা– মায়েদা, আয়াত– ৯০)

সুদ দেওয়া ও নেওয়া হারাম:

রিবা (সুদ) ইসলামে কখনোই অনুমোদিত নয়। কেননা এটাও আল্লাহপাক হারাম করেছেন। সুদের মাধ্যমে মূলত সমাজে দরিদ্র বাড়ে। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, কিন্তু যারা সুদ খায় তাদের অবস্থা হয় ঠিক সেই লোকটির মতো যাকে শয়তান স্পর্শ করে পাগল করে দিয়েছে। তাদের এই অবস্থায় উপনীত হবার কারণ হচ্ছে এই যে, তারা বলে, ব্যবসা তো সুদেরই মতো। অথচ আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করে দিয়েছেন এবং সুদকে করেছেন হারাম। কাজেই যে ব্যক্তির কাছে তার রবের পক্ষ থেকে এই নসীহত পৌঁছে যায় এবং ভবিষ্যতে সুদখোর থেকে সে বিরত হয়, সে ক্ষেত্রে যা কিছু সে খেয়েছে তাতো খেয়ে ফেলেছেই এবং এ ব্যাপারটি আল্লাহর কাছে সোপর্দ হয়ে গেছে। আর এই নির্দেশের পরও যে ব্যক্তি আবার এই কাজ করে, সে জাহান্নামের অধিবাসী। সেখানে সে থাকবে চিরকাল। (সুরা– বাকার, আয়াত– ২৭৫)

সিল্ক কাপড় এবং গোল্ড পরা পুরুষদের জন্য হারাম:

ইসলামের প্রাথমিক যুগে পুরুষের জন্য স্বর্ণ ব্যবহারের অনুমতি থাকলেও পরে তা নিষিদ্ধ হয়ে যায়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ (সা.) স্বর্ণের আংটি ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন (বোখারি ও মুসলিম)। হজরত হুবাইরা ইবনে বারিম (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আলী (রা.) বলেছেন, রসূলুল্লাহ (সা.) আমাকে স্বর্ণের আংটি ও রেশমি কাপড় ব্যবহার নিষেধ করেছেন এবং লাল গদিতে বসতে, আর যব এবং গমের শরবত পান করতে নিষেধ করেছেন। (নাসাঈ)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *