কোরবানির পশুর হাট কে সামনে রেখে এখনি শুরু হয়েছে নানা কার্য্যাবলী। কারণ আর মাত্র ৩ সপ্তাহের মধ্যেই পালিত হবে পবিত্র ঈদ-উল-আযহা। তাই দেশের বিভিন্ন জায়গায় পশুর হাট বসানোর জন্য প্রস্তুতি চলছে।

যেহেতু বাংলাদেশে কোরবানির পশুর হাটে বিপুল সংখ্যক লোক সমাগম হয় তাই কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটি জোরালো পরামর্শ দিয়েছেন যাতে ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়নগঞ্জ এবং গাজীপুরের কোন ধরনের হাট না বসানোর জন্য। ফলে গরু ব্যবসায়ীরা এ বছর ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির আশংকা করছেন।

পশুর হাট বসালে একদিকে সংক্রমণের ঝুঁকি, আবার হাট না বসালে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে ব্যবসায়ীরা। চাঁদপুরের বিল্লাল হোসেন প্রতিবছর কোরবানির জন্য ৮-১০টি গরু নিয়ে ঢাকার পশুর হাটে আসেন। অথচ এই বছর আর্থিক ক্ষতির আশংকায় সে হতাশ।

জাতীয় পরামর্শক কমিটি বলছে, গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে সংক্রমণের মাত্রা একই রকম আছে। বাড়ছেও না, আবার কমছেও না। এ অবস্থা বজায় থাকলে আগামী একমাসের মধ্যে সংক্রমণের হার নিচের দিকে নেমে আসতে পারে বলে মনে পরামর্শক কমিটি। কিন্তু সে সম্ভাবনা নস্যাৎ হয়ে যেতে পারে যদি ঢাকা এবং চট্টগ্রামসহ ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোতে  কোরবানির হাট বসে।

বাংলাদেশে গত প্রায় দেড় মাস যাবত দেখা যাচ্ছে যে যাদের পরীক্ষা করা হচ্ছে তাদের মধ্যে ২২ থেকে ২৩% এর মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা আশংকা করছেন, কোরবানির হাট নিয়ে তাদের পরামর্শ যদি উপেক্ষা করা হয় তাহলে সংক্রমণের মাত্রা কোথায় গিয়ে ঠেকবে সেটি বলা মুশকি।

জাতীয় পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোঃ শহিদুল্লাহ বলেন, চারটি শহরে যাতে কোনভাবেই পশুর হাট বসাতে না দেয়া হয় সেজন্য তারা সুপারিশ করেছেন। অধ্যাপক বলেন, বাংলাদেশে যে চারটি জায়গায় সংক্রমণের হার অনেক বেশি তার মধ্যে রয়েছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর ও নারায়নগঞ্জ। এই চারটি জায়গায় যদি এ বছর হাট না বসে তাহলে আমাদের সংক্রমণ বাড়ার ঝুঁকি কমে যাবে।

ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়নগঞ্জ এবং গাজীপুরের বাইরে পশুর হাট বসলেও সেখানে কঠোর নিয়মকানুন মেনে চলতে সবাইকে বাধ্য করা উচিত বলেন, অধ্যাপক। তিনি আরোও বলেন, খোলা ময়দানে দূরে-দূরে করে বেপারিদের বসতে হবে। একটা গেট থাকতে হবে ঢোকার জন্য, আরেকটি গেট থাকতে হবে শুধু বের হবার জন্য। ফেসমাস্ক বাধ্যতামূলক। এম সিস্টেম করতে হবে যাতে কেউ ফেসমাস্ক ছাড়া ঢুকতে না পারে।

যাদের বয়স পঞ্চাশেরর বেশী তারা যাতে পশুর হাটে না যায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক শহিদুল্লাহ। ঢাকাসহ যে চারটি শহরের ক্ষেত্রে পরামর্শক কমিটি আপত্তি জানাচ্ছে, সেসব জায়গায় হাট বসানোর ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেয় সিটি কর্পোরেশনগুলো, যেটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন। এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, জাতীয় কমিটির পরামর্শ নিয়ে তিনি এখনো জানেন না।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মহামারির কথা চিন্তা করে এমনিতেই হাট সীমিত করার পক্ষে বলেন। তিনি বলেন, আমরাও হাট না বসানোকে উৎসাহিত করছি। বিকল্প হিসেবে অনলাইনে কেনা-বেচাকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *