“সালাম” একটি সুন্দরতম অভ্যাস— সাখাওয়াত সজীব

আস্ছালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহে ওয়া বারাকাতুহু। অর্থ-আপনাদের উপর আল্লাহর অশেষ রহমত ও বরকত বর্ষিত হউক। ইসলাম ধর্মে সালামের গুরুত্ব অপরিসীম। এমন কি রাসূলে খোদা (সাঃ) সবাইকে আগে আগে সালাম দিতেন। তাই মুসলমাদের আগে সালাম দেয়া সুন্নাত, আর সালামের জওয়াব দেয়া ওয়াজিব।

একজন অন্যতম সাহাবা নাকি কোন প্রকার কেনাবেছা ব্যতীত, শুধুই সালাম আদান প্রদানের জন্য বাজারে যাতায়াত করতেন। অল্প পরিশ্রমে অধিক নেকের এই কাজটি, আজ আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় স্থান-কাল-পাত্রভেদে ব্যবহার হয়ে থাকে। ধরুন, একজন চাঁদাবাজ একজন ব্যবসায়ীকে সালাম জানিয়েছেন। এর অর্থ পঞ্চাশ হাজার কিংবা এক লক্ষ টাকা। আবার স্থায়ী ব্যবসায়ী তার কোন খর্দ্দেরকে সালাম- এর অর্থ পাওনা টাকা আদায়ের তাগিদ বৈকি!

ইসলামে যদিও সালাম প্রদানকে বড় হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে, কিন্তু আমাদের দেশে বিষয়টি ভীষন দুঃখজনক ভাবে উল্টো উপস্থাপন করার নিয়মই বহাল তবিয়তে আছে। একজন শিক্ষক অপেক্ষায় থাকেন, ছাত্রের সালামের জন্য। ছাত্র এ কাজটিতে দেরী করলে তাকে বে-আদব মনে করা হচ্ছে। পীর ছাহেব কেবলা কিংবা ইসলামী দলের নেতার প্রত্যাশাও অনুরূপই বটে।

সালাম অহংকারকে হালকা করে, করে মনকে উদার হতে সহায়তা। আমি ব্যক্তি জীবনে অনেক অহংকারী ব্যক্তিকে দেখেছি যে, সালাম পেলে তিনিও একটু মুসকী হেসে, মাথা নেড়ে জওয়াব দেন, অবশ্য সালামের জওয়াব প্রকাশ্যে উচ্চারণ করে দেয়ার ব্যাপারেই তাগিদ রয়েছে অত্যাধিক।

সালামের মাধ্যমে যেমন পরস্পরের সু-সম্পর্ক সৃষ্টি হয়, আবার মনের দূরত্ব থাকলেও ঘন ঘন সালাম দিলে তা দূর হয়ে যায়।

সালাম একবার দেয়ার পর, সামান্য ব্যবধানে ঘুরে আসার পর, রাসূল (সাঃ) আবারও সালাম দিতে বারন করেননি। উপস্থিত সকলের পক্ষ থেকে একজন সালামের জওয়াব দিলে জওয়াব আদায় হবে ঠিক কিন্তু অন্যরা যদি তাতে অংশ গ্রহণ করেন, তাতেও ক্ষতি নেই বরং একটি ইসলামী পরিবেশ ও সৌহাদ্য সৃষ্টি হতে বাধ্য।

স্বামী-স্ত্রীকে, পিতা-মাতা তার সন্তানকে সালাম দেয়া উচিত। এতে ছোট্ট-ছোট্ট সন্তানেরা যেমন সালাম শিখবে, তেমনি পুরো পরিবারে আদব-কায়দাসহ সৃষ্টি হবে একটি শৃংখলার দৃষ্টান্ত।

আজ বেদনাদায়ক হলেও সত্য যে, ইসলাম সম্পর্কে মুসলমানগণের সঠিক জ্ঞান অনেকাংশেই নেই। যারা ইসলামী ইলম (জ্ঞান) চর্চা করেন তারাও প্রয়োজন মত তা নিরপেক্ষ ভাবে উপস্থাপন বা বিতরণ করতে রাজী নন। ফলে মুসলিম অধ্যুষিত এই দেশে, যত রশি টানাটানি, মহল বিশেষ এর করুনার পাত্র, আল্লাহর মনোনীত একমাত্র ধর্ম ‘ইসলাম’ কে নিয়েই।
কার্টেসি: গাজী কবির মেহারী

Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus ( )