সম্প্রতি কানাডা ভিত্তিক বৈশ্বিক আর্থিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আর্টন ক্যাপিটাল ‘গ্লোবাল পাসপোর্ট পাওয়ার র্যাঙ্ক ২০১৭’ প্রকাশ করেছে। এবারের র্যাঙ্কিংয়ে ১৫৯টি দেশে সহজে ভ্রমণের সুবিধা নিয়ে বিশ্বের শক্তিশালী ….. তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে সিঙ্গাপুরের নাম। প্যারাগুয়ে সিঙ্গাপুরের পাসপোর্টধারীদের উপর থেকে ভিসার যাবতীয় বিধি-নিষেধ তুলে নেয়ায় জার্মানিকে টপকে গেল এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রটি। প্রথমবারের মতো এশিয়ার কোনো দেশের পাসপোর্ট এতোটা ক্ষমতাধর হয়ে উঠল। মূলত বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশের সীমান্ত দিয়ে প্রবেশে কোন পাসপোর্টের কতোটা গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে তার ভিত্তিতেই ক্ষমতার র্যাঙ্কিং করা হয়। আর এই তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান এখন ৯০তম স্থানে। ভ্রমণ পিপাসুরা একটু সুযোগ পেলেই ব্যাগ গুছিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। যদি দেশের বাইরে পাড়ি দিতে চান আর ………. স্বাদ পেতে চান তাহলে সিঙ্গাপুরকে গন্তব্য হিসেবে বেছে নিলে ভুল হবেনা একদমই। তবে তার আগে জেনে নিন বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্টের দেশ সিঙ্গাপুরের ভিসা প্রসেসিং এর নিয়মগুলো।
ঢাকায় অবস্থিত সিঙ্গাপুর কনস্যুলেট অফিস থেকে সিঙ্গাপুরের ভিসা ইস্যু করা হলেও সেখানে সরাসরি ভিসা আবেদন গ্রহণ করা হয় না। ঢাকার কিছু অনুমোদিত ভিসা এজেন্ট রয়েছে যাদের কাছে ভিসা আবেদন জমা দিতে হয়। সিঙ্গাপুরের ভিসা করতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই সেখানে বসবাসরত কারো কাছ থেকে আমন্ত্রিত হতে হবে। অন্যদিকে ডিপ্লোম্যাটিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের সিঙ্গাপুর যেতে ভিসা লাগে না। অনেকেই বলে থাকে, ফ্রেশ পাসপোর্টে সিঙ্গাপুর ভিসা দেয়া হয় না। যদিও সিঙ্গাপুর ভিসা আবেদনের জন্য ঠিক কয়টি দেশ ভ্রমণ করতে হবে সে সম্পর্কে কোনো বাঁধাধরা নিয়ম নেই কিন্তু আপনি কোন দেশে কয়দিন কিভাবে থেকে এসেছেন তা মাঝে মাঝে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। ভিসা আবেদন জমা দেয়ার দিন বাদ দিয়ে সাধারণত পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যেই ভিসা প্রসেসিং এর কাজ সম্পন্ন হয়। এর থেকে বেশি সময়ও লাগতে পারে। ভিসা ফি হিসেবে ৩০ সিঙ্গাপুর ডলারের সমপরিমাণ টাকা জমা দিতে হয়। এছাড়া সাথে ভিসা এজেন্টের সার্ভিস চার্জও জমা দিতে হবে।
ভিসা আবদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র-
১। সিঙ্গাপুরে পৌঁছানোর দিন থেকে শুরু করে অন্তত ছয় মাস পর্যন্ত মেয়াদ আছে এমন পাসপোর্ট থাকতে হবে।
২। পাসপোর্টে কমপক্ষে একটি ফাঁকা পৃষ্ঠা থাকতে হবে।
৩। পাসপোর্টে ব্যক্তিগত তথ্যের পেজটির একটি ফটোকপি আবেদনপত্রের সাথে জমা দিতে হবে।
৪। অন্তত তিন মাসের মধ্যে তোলা ২ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি।
৫। ছবি অবশ্যই রঙ্গিন হতে হবে এবং ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড সাদা হতে হবে।
৬। ছবি ২৫মি.মি.×৩৫মি.মি. সাইজের হতে হবে।
৭। সাধারণ ভ্রমণকারীদের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ২১ বয়সের বেশি সিঙ্গাপুরের স্থায়ী নাগরিক দ্বারা ‘লেটার অফ ইন্ট্রোডাকশন’ ফর্মটি ইস্যুকৃত হতে হবে।
৮। ব্যবসায়ী ভ্রমণকারীদের সিঙ্গাপুরে রেজিস্টারকৃত সংস্থার স্থানীয় যোগাযোগের ঠিকানা, সাথে প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির স্বাক্ষর করা আমন্ত্রণপত্র থাকতে হবে। স্বাক্ষরকারী অবশ্যই সিঙ্গাপুরে বাস করে এমন একজন হতে হবে।
৯। আপনার আমন্ত্রণকারী কোনো ব্যক্তি হলে তাঁর থেকে প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্র এবং তার আইডি কার্ডের কপি দিতে হবে।
এছাড়া আপনার ব্যক্তিগত ব্যাংক স্টেটমেন্ট, আপনি যদি ব্যবসায়ী হয়ে থাকেন বা ব্যবসায়িক কাজে যেতে চান তাহলে আপনার প্রতিষ্ঠান বা যেখানে চাকরি করেন তার ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখতে চাইতে পারে। চাকুরীজীবী হলে এমপ্লয়মেন্ট সার্টিফিকেট কিংবা ব্যবসায়ী হলে ট্রেড লাইসেন্সও লাগতে পারে। আপনি যদি বিবাহিত হন তাহলে ম্যারেজ সার্টিফিকেট দেখাতে হবে, সাথে রিটার্ন প্লেন টিকেট এবং হোটেল বুকিং বা যেখানে থাকবেন সেখানকার ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে।